অনলাইন ডেস্কঃ স্মার্ট বাংলাদেশে এখনও আনস্মার্ট রয়ে গেছে সরকারি দপ্তরের অসংখ্য ওয়েবসাইট। অসম্পূর্ণ, ভুল ও হালনাগাদ না হওয়া পুরোনো তথ্যে ভরা এসব ওয়েবসাইট অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করছে। এক কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর আরেক কর্মকর্তার প্রোফাইলে, চলতি দায়িত্বরত কর্মকর্তার নাম ও মোবাইল নম্বর সংযোজিত না হওয়া, নাম পদবীর বানানসহ অসংখ্য ভুলে ভরে রয়েছে এসব ওয়েবসাইট।
দেশের জনগণ ডিজিটাল সেবার মাধ্যমে যাতে ঘরে বসে যাবতীয় সেবা ও তথ্য পায়, সেজন্য সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সরকারি দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সমন্বয়ে জাতীয় তথ্য বাতায়নের আওতায় আলাদা আলাদা ওয়েব পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিজস্ব ওয়েব ডেভলোপার থাকার পরেও এসব প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট এখনও সম্পূর্ণ না।
স্মার্ট গভর্মেন্ট বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ডিজিটাল সেন্টারভিত্তিক ওয়ানস্টপ সেবাকেন্দ্র এবং দপ্তরের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে পিপিএস ও আরএমএস সফটওয়্যার এবং অনলাইন রিপোর্ট ম্যানেজমেন্ট (আরএমএস) সিস্টেম চালু করার কথা থাকলেও সেটা এখনও অনিয়মিত। এমনকি সিটি কর্পোরেশনের জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের প্রক্রিয়াও এখনও কাক্সিক্ষত সেবামানে পৌঁছায়নি।
আরও পড়ুন ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরিত হচ্ছে ‘স্মার্ট চট্টগ্রাম’
সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) তথ্য বাতায়নে প্রবেশ করে প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তার মোবাইল নাম্বারে ফোন করলে অপরপ্রান্তে ফোন রিসিভ করেছেন অন্য আরেক কর্মকর্তা। পুলিশ ফাঁড়ির অফিসারকে ফোন করলে ফোন গিয়েছে রং নাম্বারে। সরকারি একাধিক কর্মকর্তার তথ্য ও মোবাইল নাম্বার দেয়া থাকে না ওয়েবসাইটগুলোতে। তথ্য প্রদানকারী পদবীধারী কর্মকর্তার প্রোফাইল নেই বললেই চলে সরকারি অসংখ্য ওয়েবসাইটে।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চসিকের প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘চসিকের ওয়েবসাইট এখনও সম্পূর্ণ না এবং কিছু ভুল-ভ্রান্তি আছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রামের জনৈক নাগরিক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘জবাবদিহিতার ভয়ে কিংবা দায় এড়াতে কর্মকর্তারা তাদের নাম্বার ওয়েবসাইটে সংযোজন করতে চান না। এবং সরকারি দপ্তরের তথ্য কোনোভাবে কাউকে জানাতে রাজি নন তারা।’
কেবল চসিক নয় জেলা-উপজেলার সরকারি দপ্তর, থানাগুলোর ওয়েবসাইটের পরিস্থিতি প্রায় একই। একাধিক উপজেলা কার্যালয়ের ওয়েবসাইট ও থানার ওয়েবসাইটে শুধু কয়েকটি ছবি ছাড়া আর কোনো তথ্য বা কার্যক্রমের বিবরণ নেই। ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশ করলে মনে হবে কয়েকযুগ আগে এগুলোতে কারও হাতের ছোঁয়া লেগেছিলো।
Leave a Reply